সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার : এক সময় উলামায়ে কেরামগণ স্বদেশের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বে থাকলেও সময়ের ব্যবধানে আজ আর সেই সোনালী দিন অবশিষ্ট নেই। ক্ষমতা হারিয়ে ওয়ারাসাতুল আম্বিয়াগণ শুধুমাত্র তা’লীম ও তারবিয়্যাতের দিকে ঝুঁকে পড়ে জাতির বৃহত্তর খেদমতে নিয়োজিত আছেন। তারা জাতির যেমনি সুদিনে পাশে আসেন, তেমনি দুর্দিনেও থাকেন। এটা সবারই জানা যে, একমাত্র নির্লোভ ও নি:স্বার্থের দাবীদার উলামায়ে কেরামগণই দেশ-জাতির বৃহত্তর স্বার্থে নিজেদের জীবন বিসর্জনসহ জাতীর খেদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন। তাছাড়া সামান্য অর্থ আয়ের মাধ্যমে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। এটি একমাত্র তাদের ওপর আল্লাহর সরাসরি এক মহা নিয়ামত বলেই মনে করেন বিজ্ঞজনেরা। ধর্মের প্রতি তাদের অটল-অবিচল ও আস্থার বহি:প্রকাশ পায় প্রতিদিনের কাজের মাধ্যমে।
মানুষের ধর্মীয়, সামাজিক, পারিবারিক ও অর্থনৈতিক জীবনকে সম্বৃদ্ধ করার লক্ষ্যে প্রিয়নবী রাসূল (সা)-এর সময় হতে যাবতীয় কর্মকাণ্ড মসজিদে নববীকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হতো। কিন্তু মসজিদের গৌরবোজ্জ্বল সে ঐহিত্য বর্তমানের আর নেই। মসজিদগুলোকে আবার সোনালী যুগের ন্যায় ধর্মীয় এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা গেলে সমাজের সার্বিক শান্তি ও উন্নয়নের গতিধারা বেগবান হতে পারে নি:সন্দেহে। তাই মসজিদে নববীর চেতনার আলোকে দেশের মসজিদগুলোকে দ্বীনি ইবাদতের পাশাপাশি জীবনমুখি যাবতীয় কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-এর ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়। ইমাম প্রশিক্ষণের আওতায় ইমামগণকে ইসলামিয়্যাত, কৃষি ও বনায়ন, মৎস্যচাষ, হাঁস-মুরগি ও পশু-পাখি পালন, গণশিক্ষা, পরিবার কল্যাণ, প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা, প্রাথমিক চিকিৎসা, বিজ্ঞান, তথ্য ও প্রযুক্তি, পরিবেশ ও সামাজিক উন্নয়ন, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতি ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচিতি ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামগণ প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রশংসনীয় অবদান রেখে চলেছেন। এ কার্যক্রম সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।
ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঃ
মসজিদে নববীর অনুকরণে বাংলাদেশের মসজিদগুলোকে ইসলামের শিক্ষা, আদর্শ প্রচার এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা এবং এ কাজের জন্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ইমামদেরকে যোগ্য নেতা হিসেবে গড়ে তোলা। কৃষি, স্বাস্থ্য, বনায়ন, পশু-পাখি ও হাঁস-মুরগি পালন, গণশিক্ষা, প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও প্রাথমিক চিকিৎসা, মৎস্যচাষ, পরিবার কল্যাণ ইত্যাদি কার্যক্রমের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে ইমামদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা। বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি ধর্মীয় কুসংস্কার, মাদকাশক্তি, যৌতুক, সন্ত্রাস, পরিবেশ দূষণ, পয়:নিষ্কাশন, দূর্যোগ ব্যবস্থপনা, শিশু পরিচর্যা ও মানব সম্পদ উন্নয়ন সর্ম্পকে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ইমামদের উদ্ধুদ্ধকরা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত করা হয় এবং বেসিক কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, মানবাধিকার প্রশিক্ষণ, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ এইচআইভি/এইডস, এলওআই, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন করা, মাতৃ ও শিশু বিষয়ক, নিরাপত্তা অভিবাসন, মসজিদের মোতাওয়াল্লী ও ম্যারেজ রেজিস্ট্রার।
প্রশিক্ষণ নেয়া ও ইমামদের সংখ্যা, অক্টোবর-২০১৩ ঃ
সরকারি অর্থে ৪৫ দিনের নিয়মিত প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ইমামের সংখ্যা ৭৯ হাজার ২৯৭ জন, ৫ দিনের রিপ্রেসার প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ২৩ হাজার ৭৮১ জন, ২১ দিনের কর্মকর্তা প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ৩২৩ জন, কর্মচারী প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ৮৭৯ জন, ৬০ দিনের ইমাম, মাদরাসা ছাত্র ও বেকার যুবকদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ১ হাজার ৭৭৬ জন, ৫ দিনের মানব সম্পদ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ৩১ হাজার ৩৪৮ জন, ৩০ দিনের মুবাল্লিগ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ১ হাজার ৫৯৮ জন, মক্তব ব্যবস্থপনা প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ১ হাজার ৬৮৩ জন, ৫ দিনের দূর্যোগ ব্যবস্থপনা প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ৫৮২ জন, মানবাধিকার বিষয়ক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ৪শত জন, ১ দিনের এইচআইভি/এইডস প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ২শত জন, আমেরিকান সেন্টার কর্তৃক ৩ দিনের ইউএসএআইডি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ১৫ হাজার ৭০৩ জন, ৬০ দিনের কম্পিউটার প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ৬৮৪ জন, ৩ দিনের জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনকরণ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ১৫০ জন, সরকারি কর্মকর্তাদের নৈতিক উন্নয়ন বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ৩শত জন, মাতৃ ও শিশু বিষয়ক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ৫০ জন, নিরাপদ অভিবাসন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ১ হাজার জন, মসজিদের মোতাওয়াল্লী ও ম্যারেজ রেজিস্ট্রারদের প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ১৫০ জন, মাদকের অপব্যবহার প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ৫০ জন, ডায়রিয়া ও আর্সেনিক প্রতিরোধ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ১শত জন, ১২ দিনের ইফাবা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেসিক কম্পিউটার প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ১ হাজার ১৪৮ জন, ইমামদের বেসিক কম্পিউটার প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী ১ হাজার ৮৫ জনকে ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির মাধ্যমে অক্টোবর ২০১৩ সাল পর্যন্ত সর্বমোট ১ লাখ ৫৮ হাজার ৯৬৫ জন ইমামকে আর্থ-সামাজিক সর্ম্পকিত বিষয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামগণ কর্তৃক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ ইমামদেরকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। ২০০৮-২০১৩ সাল পর্যন্ত অর্থবছরে পুরস্কার প্রদানের সংখ্যা নিম্নরূপ;
২০০৮-০৯ অর্থবছরে জেলা পর্যায়ে ১৯১ জন, বিভাগীয় পর্যায়ে ১৮ ও জাতীয় পর্যায়ে ৩০ জন, ২০০৯ অর্থবছর থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জেলা পর্যায়ে ১৯২ জন করে, বিভাগীয় পর্যায়ে ২১ জন করে ও জাতীয় পর্যায়ে ৩ জন করে শ্রেষ্ঠ ইমাম বাছাই ও পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার পর প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে কৃষি খামার, হাঁস-মুরগি, গবাদিপশু খামার, বনায়ন কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ খামার প্রতিষ্ঠাকারী ইমামগণকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। ২০০৮-১৩ সাল পর্যন্ত প্রতি অর্থবছরে ৬৪ জন করে শ্রেষ্ঠ ইমাম বাছাই করা হয়।
শুরু থেকে এ পর্যন্ত ইমাম সম্মেলন ঃ
* ইমাম প্রশিক্ষণ প্রকল্পের উদ্যোগে সর্বপ্রথম ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় ইমাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি লেফটেনেন্ট জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ উক্ত মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। * গত ৭ অক্টোবর ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। * গত ২৬ এপ্রিল ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। * গত ১১ জুলাই ২০০০ খ্রিস্টাব্দে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। * গত ১লা জুলাই ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তৎকালীন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। * প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২৬ জুন ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে। সম্মেলনে জাতীয় সংসদের স্পীকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। * গত ২০ জুলাই ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। * ২০০২ সালের ১৮ ও ১৯ আগস্ট বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে মানবাধিকার বিষয়ক জাতীয় ইমাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রধান মেহমান ও বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মেরি অ্যান পিটার্স বিশেষ মেহমান ছিলেন। * ২০০৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক জাতীয় ইমাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। * ২০০৫ সালের ২৯ নভেম্বর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন হলে মানব সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক জাতীয় ইমাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। * ২০০৬ সালের ১৬ মে বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক জাতীয় ইমাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে ইউএনএফপিএ, সদর দপ্তর, ওয়াশিংটন, আমেরিকার নির্বাহী পরিচালক ড. থোরাইয়া আহমদ ওবায়েদ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। উক্ত সম্মেলনে দেশের বিরুদ্ধে অপরাধ ও সন্ত্রাস বিরোধী ভূমিকা পালনে ইমাম সাহেবদেরকে উৎসাহিত করা হয়। * ২০০৭ সালের ৯ আগস্ট ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন হলে জাতীয় ইমাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ড. ইয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ প্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। * ২০০৮ সালের ৬ আগস্ট ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন হলে জাতীয় ইমাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ড. ইয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ প্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। * ২০ জানুয়ারি ২০১১ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় ইমাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন। * ৮ ফেব্র“য়ারি ২০১১ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় ইমাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। * ১০ মার্চ ২০১২ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় ইমাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। * ২৭ জানুয়ারি ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় ইমাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। * ১০ নভেম্বর ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় ইমাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ইমাম-মোয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট ঃ
ইমাম ও মোয়াজ্জিন এবং তাদের পরিবারের সার্বিক কল্যাণে ২০০১ সালে ‘ইমাম ও মোয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট’ গঠন করা হয়েছে। ট্রাস্টের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিম্নরূপ: ক) কোন ইমাম বা মোয়াজ্জিন মারাত্মক দুর্ঘটনা, পঙ্গুত্ব, দূরারোগ্য ব্যাধি ইত্যাদি জনিত কোন কারণে অক্ষম হয়ে পড়লে তাকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করা; খ) কোন ইমাম বা মোয়াজ্জিন আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবারকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করা; গ) ইমাম বা মোয়াজ্জিন প্রবিধান দ্বারা নির্ধারিত কারণে ও পদ্ধতিতে যথা মৎস্যচাষ, হাঁস-মুরগি ক্রয় ও পালন, গরু ক্রয় ও মোটা তাজা করণ, ছাগল ক্রয় ও পালন, কুটির ও হস্তশিল্প জাত দ্রব্য উৎপাদন ও বিপনন, রবিশষ্য বা মৌসুমী কৃষিজাত শষ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করণ, ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালনা করণ এবং বোর্ডের বিবেচনায় শরীয়ত সম্মত অন্য যে কোন খাতে ঋণ প্রদান; ঘ) ইমাম বা মোয়াজ্জিনের মেধাবী ছেলে-মেয়েদেরকে শিক্ষার জন্য আর্থিক সাহায্য প্রদান; ঙ) ইমাম বা মোয়াজ্জিনগণ এবং তাদের পরিবারের সার্বিক কল্যাণ সাধন করা।
সিলেবাস প্রণয়ন ঃ
ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি কর্তৃক প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য ১ হাজার নাম্বারের সর্বশেষ সংশোধিত সিলেবাস প্রণীত হয়েছে। যে সকল বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণের পাঠদান করা হয়ে থাকে, সেগুলো হলো ইসলামিয়্যাত, প্রাথমিক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, কৃষি ও বনায়ন, প্রাণিসম্পদ পালন ও মৎস্যচাষ, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি, পরিবেশ ও সামজিক উন্নয়ন, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচিতি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন কার্যক্রম ও পরিচিতি এবং ব্যবহারিক ও মৌখিক।
এ দেশের উলামায়ে কেরাম নি:স্বার্থভাবে ইসলামের খেদমত করে যাচ্ছেন, তেমনি দেশের সরকারি পৃষ্টপোষকতায় বর্তমান সময়েও প্রযুক্তিগত জ্ঞান আহরণ করে এ কাজের গতিকে আরো শাণিত করছেন। দেখা গেছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধিনে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃক পরিচালিত ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি থেকে এ দেশের আলেম-উলামাদের থেকে যারা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন, অধিকাংশই হচ্ছেন বেসরকারি মাদরাসা বা ক্বওমী মাদরাসার শিক্ষার্থী। কারণ, এখানে সর্বপ্রথম গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে ইমামদেরকে। আর মসজিদের ইমাম বা খতিব অধিকাংশই হলেন ক্বওমী ধারার শিক্ষা গ্রহণকারী ওয়ারাসাতুল আম্বিয়া। সুতরাং একথা নির্ধিদায় বলা যায় যে, সঠিক ও বাস্তবমুখি শিক্ষার মাধ্যমে আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে আলেম সমাজ এগিয়ে আছেন।
সূত্র ঃ নতুন বিশ্ব, আল-ইমামত ও অন্যান্য প্রকাশনা।
লেখক ঃ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও ২০১৩ সালে সুনামগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ইমাম নির্বাচিত, সাংবাদিক ও কলামিস্ট।